Help Line

+8809638390319

অনলাইনে নিরাপদ কেনাকাটা

অনলাইনে কেনাকাটায় নিরাপদ থাকার ১০টি অপ্রচলিত কিন্তু কার্যকরী উপায়

আজকের ডিজিটাল যুগে অনলাইনে কেনাকাটা আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। কয়েকটি ক্লিকেই পছন্দের পোশাক, ইলেকট্রনিক্স কিংবা গৃহস্থালির জিনিস পৌঁছে যায় দরজায়।
তবে সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে বড় এক ঝুঁকি— প্রতিদিন হাজারো মানুষ অনলাইন স্ক্যাম, ফিশিং ও ডেটা চুরির শিকার হচ্ছেন।

কিন্তু চিন্তার কিছু নেই! আজ আমরা জানব কিছু অপ্রচলিত কিন্তু অত্যন্ত কার্যকরী টিপস, যা আপনার অনলাইন কেনাকাটাকে আরও নিরাপদ করে তুলবে।




১. ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার করুন – আসল কার্ড নয়

আপনার ব্যাংক যদি ভার্চুয়াল ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড সেবা দেয়, তাহলে সেটিই ব্যবহার করুন। এটি এক ধরনের অস্থায়ী কার্ড নম্বর, যা একবারের জন্য ব্যবহৃত হয়। এর ফলে আসল কার্ডের তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

২. অপরিচিত সাইটে ঢোকার আগে “স্যান্ডবক্স” ব্যবহার করুন

কোনো নতুন বা অপরিচিত অনলাইন শপে ঢোকার আগে ব্যবহার করুন Sandbox Mode (যেমন Chrome-এর Guest Mode বা Sandboxie সফটওয়্যার)। এভাবে আপনার মূল ডিভাইস ম্যালওয়ার বা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকবে।




৩. 2FA নয়, এবার “থ্রি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন” চেষ্টা করুন

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ভালো, কিন্তু আরও এক ধাপ এগিয়ে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন (আঙুলের ছাপ, ফেস আইডি) বা হার্ডওয়্যার টোকেন (যেমন YubiKey) ব্যবহার করুন। তাহলে হ্যাকারদের পক্ষে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢোকা প্রায় অসম্ভব হবে।

৪. “ডামি ইমেইল” – আপনার প্রাইভেসির রক্ষাকবচ

শপিং সাইটে রেজিস্ট্রেশনের সময় Temp-Mail.org বা 10MinuteMail এর মতো ডিসপোজেবল ইমেইল ব্যবহার করুন। এতে আপনি স্প্যাম বা অনাকাঙ্ক্ষিত ইমেইল থেকে মুক্ত থাকবেন।

৫. “পাসওয়ার্ড ম্যানেজার” নয়, “পাসফ্রেজ” বানান

“Password123” নয়, বরং এমন বাক্য ব্যবহার করুন যা মনে রাখা সহজ কিন্তু হ্যাক করা কঠিন। যেমন: “আমারপ্রথমগাড়ীটা_নীলছিল!” এই ধরণের পাসফ্রেজ হ্যাকারদের জন্য ভয়ানক কঠিন টাস্ক হয়ে দাঁড়াবে।

৬. “ডার্ক ওয়েব স্ক্যান” করে দেখুন তথ্য ফাঁস হয়েছে কিনা

Have I Been Pwned (HIBP) বা Dark Web Monitor দিয়ে সহজেই চেক করতে পারেন আপনার ইমেইল বা পাসওয়ার্ড কোথাও ফাঁস হয়েছে কি না। নিয়মিত এই স্ক্যান করলে আপনি আগেই সতর্ক হতে পারবেন।

৭. ব্রাউজারে “অটো-ফিল” বন্ধ রাখুন

ব্রাউজারে কার্ড নম্বর, পাসওয়ার্ড বা ঠিকানা সেভ রাখা বিপদজনক হতে পারে। প্রতিবার ম্যানুয়ালি তথ্য দিন। সময় একটু বেশি লাগবে, কিন্তু নিরাপত্তা বহুগুণ বাড়বে।

৮. “VPN + Tor” কম্বো ব্যবহার করুন

শুধু VPN নয়, প্রয়োজনে Tor ব্রাউজার দিয়ে কেনাকাটা করুন (যদি সাইটটি Tor সমর্থন করে)। এতে আপনার লোকেশন ও আইপি ঠিকানা গোপন থাকবে, হ্যাকারদের নাগালের বাইরে।




৯. “ফেক কাস্টমার কেয়ার” কল থেকে সতর্ক থাকুন

অনেকে নিজেদের অফিসিয়াল প্রতিনিধি পরিচয়ে ফোন করে তথ্য নিতে চায়। কোনো লিংকে ক্লিক করার বা তথ্য দেওয়ার আগে অবশ্যই অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা পেজ থেকে ভেরিফাই করুন।

১০. কেনাকাটা শেষে “ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট” মুছে ফেলুন

লেনদেন শেষ হলে ব্রাউজারের হিস্ট্রি, কুকিজ ও ক্যাশে ক্লিয়ার করুন। বিশেষ করে যদি আপনি পাবলিক Wi-Fi ব্যবহার করেন, এটি একদম জরুরি।

১১. চূড়ান্ত পরামর্শ: “ট্রাস্ট ইয়োর গাট”

যদি কোনো অফার “too good to be true” মনে হয়, তাহলে সেটি সম্ভবত স্ক্যাম। সবসময় বিশ্বস্ত সাইট যেমন Daraz, Amazon, বা অফিসিয়াল ব্র্যান্ড ওয়েবসাইট থেকেই কেনাকাটা করুন। তবে বিশ্বস্ত বলতে কেবল বড় বড় ওয়েবসাইট-ই বুঝায় না, অনেক ছোট ছোট ওয়েবসাইট থেকেও খুব ভালো সেবা পাওয়া যায়।

পরিশেষে বলবো,

অনলাইনে নিরাপদ থাকার মূলমন্ত্র হলো — সচেতনতা + প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার। এই টিপসগুলো নিজের কাছে রাখবেন না, পরিবার ও বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করুন —কারণ সচেতনতা ছড়ালেই নিরাপদ হবে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ।




Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart
Scroll to Top